চট্টগ্রামের ১৫ উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ইটভাটা আছে রাঙ্গুনিয়া উপজেলায়। পরিবেশ অধিদপ্তরের হিসাবমতে, এই উপজেলায় ইটভাটা আছে ৬৯টি। এর মধ্যে ৬৬টি ইটভাটা অবৈধ। তবে স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ইসলামপুর, দক্ষিণ রাজানগর এবং রাজানগর ইউনিয়নেই রয়েছে প্রায় শতাধিক ইটাভাটা। অন্যান্য উপজেলাসহ এখানে প্রায় ১৩০টির মতো ইটভাটা রয়েছে, যার অধিকাংশতেই জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ।
রাঙ্গুনিয়া উপজেলার ইসলামপুর ইসলামের আবদুল মোতালিব নামে এক ইটভাটার মালিক জানান, ইটভাটা নির্মাণের পর পরিবেশ অধিদফতরে লাইসেন্সর জন্য আবেদন করা হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ইটভাটা পেয়েছে। বাকিগুলো প্রক্রিয়াধীন। কয়লার দাম বেশি এ কারনে কয়লা জ্বালানোর প্রতি ভাটা মালিকদের আগ্রহ কম। জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে কাঠ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. মুফিদুল আলম বলেন, ‘অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত আছে। গত ২৬ ডিসেম্বরও সাতকানিয়ায় অভিযান চালানো হয়। তবে জনবল সংকটের কারণে যতটুকু অভিযান পরিচালনার প্রয়োজন ততটুকু করা হচ্ছে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্রিকফিল্ড ব্যবসায়ী বেড়ে যাওয়ার কারণে রাঙ্গুনিয়ায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে পাচারকারী ও চোরাই জ্বালানি কাঠের ব্যবসা। সংরক্ষিত বনাঞ্চল এবং সামাজিক বনায়নের বাগান উজাড় করে তৈরি করা হচ্ছে জ্বালানি কাঠ। অসাধু বন কর্মকর্তদের যোগসাজশে বিভিন্নস্থানে ডিপোতে মজুদ করে সেখান থেকে কাঠ যাচ্ছে ইটের ভাটায়। বিশেষ করে কাপ্তাইয়ের কর্ণফুলী রেঞ্জের আড়াছড়ি, চিৎমরম, রামপাহাড়, সীতাপাহাড় এবং কাপ্তাই পাল্পউড বন বিভাগের রাজস্থলী, বান্দরবান, বনাঞ্চলের বাগানের বৃক্ষ জ্বালানি কাঠ করে সরফভাটার মিরেরখীল, ভুমিরখীল, রাইখালী, কোদালা, পুর্ব কোদালা, শিলক থেকে কাঠ এসে কর্ণফুলী নদীর তীরে এবং চন্দ্রঘোনা দেওয়ানজীরহাট খেয়াঘাটের নিকটে প্রকাশ্যে মজুদ করে গড়ে তোলা হয়েছে চোরাই জ্বালানি কাঠের বড় বড় ডিপো। এই ডিপোগুলো থেকে চাঁদের গাড়িযোগে চোরাই জ্বালানি কাঠ পাচার করা হচ্ছে উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটায়। প্রতিটি ইটভাটায় যে পরিমাণ ইট উৎপাদন হয়, সে অনুযায়ী সরকারি ভ্যাট পরিশোধ হচ্ছে না। ফলে সরকার একদিকে হারাচ্ছে বিশাল অংকের রাজস্ব অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে পরিবেশ।
তথ্যসূত্র: বাংলাট্রিবিউন
Leave a Reply